আমাকে ছুঁয়ো না
—মুহাম্মদ রুকুন উজ জামান রতন
আমাকে ছুঁয়ো না আমি অস্পৃশ্য
অদৃশ্যমান ভাইরাস–নাম করোনা ।
বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার মতে আমি নাকি
মারাত্মক ছোঁয়াচে। আমার আক্রমণে
সারা বিশ্ব আজ বিপর্যস্ত । মানি, কিন্তু
আমি হন্তারক হলেও কিছুটা সভ্যতা ও
সামাজিক শিষ্টাচার তোমাদের দিতে পেরেছি
এই আমার প্রাপ্তি ।
আমার তাণ্ডবে তোমরা আজ ঘরে ঘরে
নির্বাসিত । এমন কি মসজিদ, মন্দির, গির্জার
আবাহনও থমকে গেছে–থমকে গেছে
গোটা পৃথিবীর সকল কর্মশালা ।
তোমরা আমাকে অহেতুক দোষারোপ কোরনা
এ আমার দোষ নয়, দোষ আমার স্বভাবের ।
আমার কোনো জাতপাত নেই, উঁচুনীচু ভেদাভেদ নেই
আমি যে কারুর সংস্পর্শে সজীব, সতেজ ভয়ংকর
হয়ে উঠি। কেন যে তোমরা তা বোঝ না। আপসোস
বড় আপসোসই রয়ে গেলো ।
দেখছো না আমি দেশ হতে দেশান্তরে ছুটছি ।
অথচ আমার কোনো পাসপোর্ট ভিসার প্রয়োজন
নেই । আমি ক্রমাগত ছুটছি তো ছুটছি তোমাদের
সাহায্য সহযোগিতায়–তাই তো তোমাদের কাছে
আমি ঋণী রয়ে গেলাম ।
আমাকে মারার জন্য বিশ্বব্যাপী চলছে গবেষণা
চলুক, কিন্তু আমি মৃত্যু ভয়ে ভীতু নই।
তোমরাই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছো পরম মমতায় ।
পাচার করে দিচ্ছো লোক থেকে লোকান্তরে–
চোরা কারবারিদের মতো । আর এ ভাবেই
আমি আমার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রেখেছি
নির্ভীক চিত্তে ।
বলেছিতো, আমাকে ছুঁয়ো না—
ছুঁলেই আমার ক্রোধ , হিংস্রতা উজ্জীবিত হয়।
তখন আমি আর আমি থাকি না।
আমি তোমাদের হন্তারক হতেও দ্বিধা বোধ
করি না। সে চিত্র বিশ্ব ব্যাপী পরিব্যাপ্ত ।
একবার তাকাও সেদিকে তবেই বুঝতে পারবে
আমার নিষ্ঠুরতার ভয়াবহতা ।
দোহাই তোমাদের আমাকে ছুঁয়ো না—
মাইরি বলছি, আমাকে ছুঁয়ো না, ছুঁয়ো না,ছুঁয়ো না
নিজের সর্বনাশ নিজে ডেকে এনো না।
সচেতন হও, গুণিজনের নির্দেশ পালন করো ।
বিদায়, হে বন্ধু- বিদায়।।