✓ হামরা চরুয়া নোক বাহে ✓
—মুহাম্মদ রুকুন উজ জামান রতন ||
ও বাহে ধনীর ব্যাটা–
কোনটে যাবার নাইগচেন
দুইকান কতা শুনি যাও
কাইঁ শোনে বাহে কার কতা ।
কতো করি কনু,
তোমার পাত পড়ি বাহে,
হামার কতাকনা শুনি যাও।
আইসলেন না , শুনলেন না।
গরিবের কপাল বাহে,গরিবের কপাল ।
কাইঁও শোনে না হামার কতা ।
বানভাসি মানুষ বাহে হামরা ।
হামার দুঃখের সীমা নাই।
পেত্তেক আইতৎ হামার ঘরোত
ন্যাম্পুও জ্বলে না। ছোয়াগুইলার মুখোত
এক লোকমা ভাতও দিবার পারং না।
কান্দি কান্দি নিন্দাইয়া পড়ে।
স্যালা মনোত হয় আল্লাহ্ ক্যান
হামার মরণ দেয় না । উপায় না দেখি
চ্যারমেন সাবের কাছোত যাই
কতো কাকুতি মিনতি করনু
কুন বাহে, চ্যারমেনের ব্যাটা, হামারতো আর
বাঁইচপার উপ্যায় নাই, এক না উপ্যায়
হামাক করি দ্যান বাহে।
ভাইয়্যো, হামার কতা ওমার কানোতেই গেইল না।
ফিরি আইসলং ন্যাম্বরের বাড়ি–
ন্যাম্বরের পাত পড়ি কনু তোমরা হামাক
ন্যাদাইলে ন্যাদান মুই তাকো কিছু কবার নোয়াং।
তিন দিন কোন খাবার খাংনি বাহে।
ছোয়াগুইলা মারার হাল ধইরছে।
বেটি ছাওয়ার কামাই নাই। মুইও ঘরোত বসি।
একটা উপায় তোমরা করো বাহে, নাইলে—-
ন্যাম্বার সাবের মন গলিল
ওমরা হামাক এক না ইস্কা কিনি দেইল।
অ্যালা পত্তায় দিন ইস্কা ধরি টাউনৎ যাং
খ্যাপ মারি দুয়ারি টাহাও পাং।
সংসারটাকে কোনমতে ধরি আইকপার পাইচ্লং।
ইয়ার মইদ্যে শোনং আরেক কতা।
হায় রে গরিবের কপাল! বেশি সুখ তাতে
ধরিল্ না। শোনং তামাম দুনিয়াৎ করোনা ভাইরাস
না কোভিড-নাইন্টিন আক্রমণ কইরছে । দুনিয়ার ব্যাবাক মানুষ নাকি নাকে নাকে মারার নাইগছে ।
ওয়াঁয় নাকি দারুন ছোঁয়াচে। সুযোগ পেলেই
এক দ্যাহ থেকে আরেক দ্যাহে চলি যায় ।
হামার দ্যাশেও এই ওগ আসি গেইছে বাহে।
সরকার বিলি ঘোষণা দিছে সামাজিক দুরত্ব
বজায় আইকপার। ঘরোত থাইকপার ।
তা না হলি সগাইকে মরতি হবি।
মুখ্যু শুক্যু মানুষ মুই অতশত বোঝং না।
তাই ইস্কা ধরি টাউনৎ গেইলং ভরা ধরি।
কি আর কং বাহে পুলিশের লাঠি পিঠৎ
আর পাছাৎ হজম করি বাড়ি ফিরলং খালি হাতৎ।
ও বাহে দেওয়ানির ব্যাটা,
তোমরা সগাই শোনেন-
একদিন হামার সোগেই আছলো বাহে
সোগেই আছলো-গোলাৎ ধান, পাগারৎ মাছ,
গোয়ালৎ গরু , আলান-পালান, খ্যাত খামার,
কি আছলো না বাহে,সোগেই আছিল ।
বিশ্বাস করো আর নাই করো বাহে
সেসব কতা আর নাই বা কইলং
অ্যালা দুমুঠো ভাতের জন্নি অ্যাতো হাংগামা সহ্য করা।
সোগেই হামার কপাল বাহে, কপাল!
ঘরে কাম নাই, বাইরে যাওন বন্ধ ।
এবার বড় মাইয়াডার বিয়াও দেওয়ার কতা আছলো ।
তাকও আর হইল না। কি যে করং। মাতাৎ চরক পড়ে না ক্যান । নানান কতা ভাবতি ভাবতি আইতৎ য্যালা
শুতে গেইলং শ্যালা কাইঁ আবার ডাইকলে ব্যাড়াৎ
থাপ্পড় দিয়ে। হুরমুরি উঠি দ্যাখং তাই হামার পড়সি।
তায় কইলে কাল বিয়ানবেলা হামার বাড়ি আসপু ।
মুই কলাম কিবিলি । তায় মোক কইলে ঐ যে হামার মাস্টার ব্যাটা- ঐ যে কচাকাটা হাই স্কুলের হেড মাস্টার
মোঃ রুস্তম আলী। মনোৎ পড়ে? হ্যাঁ হ্যাঁ কি হইবে তার?
মুই মচকে উঠলং ওয়ায় কইলে তাঁর ছোয়ার ঘর ত্রাণ দিতে চরোৎ আইসপে। এই কতা শুনি আন্দার দুই চৌকত একনা আলো জ্বলে উঠিল বাহে।
বুক উঁচিয়ে বলতে ইচ্ছে করিল আল্লাহ্ ওমাক বাঁচি
আকুক যুগ যুগ ধরি।
হামার চরুয়া নোক বাহে, হামারা চরুয়া নোক ।
দুধকুমার নদীই হামাক খাইলে–
হামার কতা শুইনবার মানুষ কই?
গরিবের হক তোমরা খাও বিলি তো হামরা
ত্রাণ পাং না, ইলিপ পাং না। দশ টাহার চাউলও
পাং না । সোগেই তোমরা চুরি কইরবার নাইগচেন।
গরিবের চাউল চুরি কইল্লে আল্লাহ্ গজব দিবে।
অ্যালাও সময় আছে সরকারের দ্যাওয়া ইলিপের
চাউল হামার প্রত্যেক ঘরোত পৌঁছে দিয়ে যাও বাহে ।
নাইলে কূল পাবে না তাক্ কিন্তু কয়া দিনু ।
এই যে দ্যাশ দরদিরা ,
এই যে নন্দনালেরা,
এই যে নবাবি গণতন্ত্রীরা,
ন্যাম্বর, চ্যারমেন, স্বেচ্ছা সেবক দলের কর্মীরা,
সগাই সাবধান হন। গরিবের আমানত খিয়ানত করেন না। দোহাই তোমার তোমরা ভাল হয়া যান । নইলে চাউল চোর, আটা চোর, ত্যাল চোর, আলু চোরের লেবেল গাৎ চইরবে। ইজ্জত বলতে একটা কতা আছে তাও তোমার নাই। তোমরাগুইলা হলেন – ইতর, বেশরম, বেদরদি, বেহায়া। তোমরাগুইলা করোনার চেয়েও খারাপ। মরণই তোদের প্রাপ্য । তোমার মুখও আর আমরা দেইকপার চাং না, চাং না,চাং না।