রান্নায় পেঁয়াজের ব্যবহার নেই, বাঙালি একথা ভাবতেই পারে না। পেঁয়াজ যদিও চাল-ডালের মতো অত্যাবশ্যকীয় খাদ্য না, তাহলেও পেঁয়াজ বাদ দিয়ে কি প্রতিদিনের রান্নাবান্না চলে ? পেঁয়াজ ছাড়া রান্নার কথা বাঙালিরা চিন্তাও করতে পারেন না। বিশেষভাবে মাংস ও মাছ রান্নায় । রসুন হয়তো বাদ দেয়া চলে, কিন্তু পেঁয়াজ থাকতেই হবে। বিগত কয়েক বছর থেকেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের সংকট বেড়েই চলছে। বিশেষ করে ভারত ও আমদানি নির্ভরতার কারনে পেয়াজের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে যায়।
দেশে পেঁয়াজ সংকট মোকাবিলায় অন্যান্য মসলার মতো ‘পেঁয়াজ গুঁড়া’ উদ্ভাবন করেছে বগুড়া মসলা গবেষণা কেন্দ্র। উৎপাদন শুরু হলে দেশের মোট চাহিদার ৩০ শতাংশ পেঁয়াজের পচন রোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানান, কাঁচার চেয়ে পেঁয়াজের গুঁড়া বেশি সাশ্রয়ী হবে এবং সংরক্ষণ করা যাবে।
বাজারে প্রচলিত অন্যান্য গুঁড়ার মতোই প্রক্রিয়াজাত করে রান্নার কাজে ব্যবহার করা যাবে এ গুঁড়া।
বগুড়ার শিবগঞ্জের মসলা গবেষণা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (পোস্ট হারভেস্ট) ড. মো. মাসুদ আলম ২০০৯ সালের দিকে পেঁয়াজের পাউডার প্রক্রিয়াজাতকরণ পদ্ধতি নিয়ে কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানোর পর অবশেষে উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে পেঁয়াজের পাউডার তৈরিতে সফলতা পেয়েছেন।
ড. মাসুদ আলমের তত্ত্বাবধানে গুঁড়া পেঁয়াজের উৎপাদন চলছে। এটি ছড়িয়ে দিতে পারলে পেঁয়াজ সংকট আর থাকবে না বলে আশা প্রকাশ করেন মাসুদ আলম। পেঁয়াজের পাউডার বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
এ গুঁড়ার মান সম্পর্কে এই গবেষক বলেন, পেঁয়াজ গুঁড়া করলে এর গুণগত মান ও স্বাদ আগের মতোই থাকবে। এক কেজি পেঁয়াজ শুকিয়ে গুঁড়া পাওয়া যায় ১০০-২০০ গ্রাম। সম্পূর্ণ দেশীয় এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ছোট পরিসরেও উদ্যোক্তারা পেঁয়াজ গুঁড়া উৎপাদন করতে পারবেন, সংরক্ষণও করতে পারবেন সহজেই।
মসলা গবেষণা কেন্দ্রের তথ্য মতে, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৩৫ লাখ টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদিত হয় প্রায় ২৪ লাখ টন। বাকিটা আমদানি করতে হয়। পেঁয়াজের পাউডার বাজারজাত করা গেলে আমদানি কমবে। উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে দেশে পেঁয়াজের পাউডারের বাজার তৈরি করলে বিপুল আয়ের নতুন পথ খুলবে।
উবাভ নিউজ ডেস্ক/জেড এম/